‘স্যরি কেন বলবো? ভেতরে ডিআইজি স্যার আছেন’
পেশাগত দায়িত্ব পালনে রাজধানীর
শ্যামলী থেকে মোটরসাইকেল যোগে নিউমার্কেট যাচ্ছিলেন শাহরিয়ার হাসান নামে এক সংবাদ
কর্মী। পথে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার ব্যবহৃত পাজেরো জিপ তার মোটরসাইকেলের
পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে শাহরিয়ার পড়ে গিয়ে আহত হন। শনিবার (৭ ডিসেম্বর)
ধানমন্ডি-২৭ মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরে অভিযোগ
করেছেন বলে জানান ভুক্তভোগী সাংবাদিক শাহারিয়ার হাসান। তিনি অনলাইন নিউজ পোর্টাল
বার্তা-২৪ এর অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক।
শাহরিয়ার অভিযোগ করেন, “ধানমন্ডি-২৭ নম্বর মোড়ে হঠাৎ করেই একটি পাজেরোজিপ আমার বাইকের পেছনে ধাক্কা
দেয়। তখন বাইকটি গিয়ে সামনের একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে এবং আমি রাস্তায় পড়ে
যাই। এরপর আমি কোনোমতে উঠে দাঁড়াই, তবে ধাক্কা দেওয়া পাজেরো জিপটি দ্রুত চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন ওই গাড়ির
পিছু নেই এবং এক পর্যায়ে গাড়িটির গতিরোধ করে দাঁড় করাই। চালককে নামতে বললে তখন
তিনি ইশারায় রাস্তা ছেড়ে দিতে বলেন। পরে পুলিশের পোশাক পরিহিত ওই চালক গাড়ি থেকে
নেমে প্রশ্ন করেন, ‘কী হয়েছে?’ আমি গাড়ির ভেতরে কে আছে তাকে নামতে বলি। বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণও জানতে
চাই। বলি,
আমি তো এখনই মরে যাচ্ছিলাম। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেন, কিছু না করলেও অন্তত দুঃখ প্রকাশতো করতে পারতেন।
গাড়িটির চালক উত্তরে বলেন, ‘স্যরি কেন বলবো? মরে তো যাননি, ভেতরে ডিআইজি স্যার আছেন। রাস্তা ছেড়ে দেন।’ এই বলে সে আমার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে।”
শাহরিয়ার আরও বলেন, ‘ঘটনার বেশ কিছু সময় পর গাড়ি থেকে পুলিশ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত অফিসার বেরিয়ে
আমার বাইকের ছবি তোলেন।’ ওই কর্মকর্তা
বলেন,
‘রাস্তা ছাড়েন ভাই, ডিআইজি স্যার বসে আছেন।’ এসময় গাড়িটির
চালক উল্টো বলেন, ‘ক্ষতিপূরণ দেন।
না হয় ট্রাফিক পুলিশ ডাকি।’
উত্তরে আমি বলি, ‘ডিআইজি তো কি হয়েছে। গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলবেন, একটা স্যরি পর্যন্ত বলবেন না। নামতে বলেন, তার মুখটা দেখি।’ তখন আবারো
আমাকে বলা হয়, ‘স্যার বিরক্ত
হচ্ছেন ভাই, রাস্তা ছাড়েন।’ পরে পায়ের ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের ওই গাড়িটির সামনে থেকে সরে
দাঁড়াই।
ভুক্তভোগী শাহরিয়ার দুঃখ করে বলেন, সড়কে আইন সবার জন্য সমান। পুলিশের জন্য আলাদা কোনও আইন নেই। কিন্তু তারা
(পুলিশ) সেটি মনে করে না। এ বিষয়টি আমি পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া বিভাগকে অবগত
করেছি। তারা কি করেন সেটিই এখন দেখার বিষয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের
এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘বিষয়টি সাংবাদিক শাহরিয়ার আমাকে জানিয়েছেন, ওই গাড়ির ছবিও দিয়েছেন। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি গাড়িটি পুলিশের কে ব্যবহার করছেন।’ সম্পূর্ণ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।
(সূত্র https://www.banglatribune.com/others/news/598087)